সান্ডা প্রাণী: উপকারিতা, লোকবিশ্বাস ও বিপন্ন বাস্তবতা

সান্ডা টিকটিকি: একটি বিস্ময়কর বন্যপ্রাণী

সান্ডা টিকটিকি: একটি বিস্ময়কর বন্যপ্রাণী

সান্ডা বা মনিটর লিজার্ড বাংলাদেশের একটি পরিচিত কিন্তু বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির সরীসৃপ। এটি শুধুই একটি প্রাণী নয়—এটি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সান্ডার বৈজ্ঞানিক পরিচিতি

  • বৈজ্ঞানিক নাম: Varanus bengalensis
  • গোত্র: Varanidae
  • বিস্তৃতি: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা

সান্ডার শারীরিক বৈশিষ্ট্য

সান্ডার শরীর শক্তিশালী, মাথা লম্বাটে ও লেজ বেশ বড়। সাধারণত এটি ১.৫ থেকে ২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। শরীর বাদামী ও গায়ে কালো দাগ থাকে।

খাদ্যাভ্যাস ও জীবনচক্র

সান্ডা একটি মাংসাশী প্রাণী। এটি ইঁদুর, পোকা, পাখির ডিম ও কখনো ছোট প্রাণী খেয়ে থাকে। স্ত্রী সান্ডা বছরে একবার ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ৮-১০ সপ্তাহ সময় লাগে।

লোকঔষধে সান্ডার ব্যবহার

অনেকেই বিশ্বাস করেন সান্ডার তেল যৌনশক্তি বৃদ্ধির জন্য উপকারী, যদিও বিজ্ঞানসম্মত কোনো প্রমাণ নেই। এ কারণে এর উপর অত্যাচার বেড়েছে এবং প্রাণীটি এখন হুমকির মুখে।

আইন ও সংরক্ষণ

সান্ডা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে একটি সংরক্ষিত প্রজাতি। শিকার, হত্যা বা পাচার করা আইনত দণ্ডনীয়। এটি রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

সচেতনতামূলক বার্তা

“সান্ডাকে বাঁচান, প্রকৃতিকে বাঁচান। পরিবেশ রক্ষা মানেই নিজের ভবিষ্যৎ রক্ষা।”

সান্ডার গুরুত্ব

  • পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক।
  • পোকামাকড় ও ক্ষতিকর প্রাণীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • শিক্ষামূলক ও গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রকৃতির একটি অংশ।

উপসংহার

সান্ডা একটি সুন্দর, উপকারী ও পরিবেশবান্ধব প্রাণী। এটি রক্ষা করা শুধু পশুপ্রেমীদের কাজ নয়, এটি আমাদের প্রাকৃতিক দায়িত্ব। আসুন সবাই মিলে সচেতন হই এবং সান্ডাকে রক্ষা করি।

লেখক: শাকিল আহমেদ

তারিখ: ১৬ মে ২০২৫

বিভাগ: বন্যপ্রাণী, পরিবেশ শিক্ষা

Post a Comment

Previous Post Next Post